নৈষ্ঠিক সাহিত্য পত্রিকা
Wednesday, November 1, 2017
শব্দজোনাকি উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় বিকেলে এক ঝাঁক শব্দ উড়ছিল নদীর ধারে সূর্যের রুগ্ ণ ডানা বেয়ে চুঁইয়ে পড়ছিল রং শব্দগুলো সেই রং এ স্নান করে উড়ে এসেছিল আমাদের পাড়ায় সন্ধ্যায় তোর একমুঠো হাসি ছড়িয়ে দিতেই শব্দজোনাকি ইচ্ছেউঠোনের গায়ে লাইনের পর লাইন দাঁড় করালাম ভুলবো না,সেটাই আমার প্রথম কবিতা ●■●■●■ কবিতাটি এপ্রিল 2015 তে ""কবিতা সীমান্ত""পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। ঠিকানা---27, বি.টি.রোড, কামারহাটি, কলকাতা---700058.সম্পাদক--দীপেন রায়।
Monday, June 19, 2017
সুজিত অধিকারী র অপ্রকাশিত দশটি কবিতা
তন্ত্রসাধনা
মাথার উপর নগ্ন চাঁদ, আমি কবিতা পড়ি
কামনা নয় বাসনা নয়, তার শরীর থেকে
উঠে আসে বোধি সংলাপ
বাবার মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে তর্পণ করি
শুরু হয় তন্ত্রসাধনা
একা হতে হতে চলি গভীর রাত্রির দিকে
মূর্তি - ১
অভিমান পুষে রাখি
আবছা মূর্তিটা কি তোর ছিল সুদীপ ?
ড্রেস হাউস, হাইওয়েতে, জানালার আকাশে, নির্জনে
অন্ধকারে জোনাকির মিছিলে
ওয়েবসাইটের ব্যালকনিতে কার মূর্তি ?
আকাশের গায়ে দেখি প্রতিবিম্ব
দু'পা ভারী হয়ে মাটিতে গেঁথে যাচ্ছে
সত্য ও অন্ধকার ঝুলে আছে আমাকে ঘিরে
মূর্তি - ২
দু'চোখে সারাদিন বৃষ্টি দেখছি আজ
বৃষ্টিতে ভিজে যায় মাটি
এ মাটিতে গড়ে তুলি তোমার মূর্তি
ডিমা নদীর পাড়ে এখন সন্ধ্যার পায়চারি
আমি তোমার মূর্তি থেকে জ্যোৎস্নার
ছায়া নেমে আসা দেখি .........
উদ্ভিদ ব্যাকরণ
শুকিয়ে যাচ্ছে মাটির যোনি
সমুদ্র থেকে ছুটছে দুরন্ত বাইসন
ভুলে গেছি উদ্ভিদ ব্যাকরণ
প্রতিদিন ব্যবচ্ছেদ করি ব্রহ্মবীজ
মমি
অপুষ্টি জমেছে মনে
অসম্পূর্ণ স্তুতি
আমরা এলাম পাশে
যমুনা পাড়ে
যতটুকু তুমি আছো
ততটুকু আমি
আমরা দুজন আজ
আমাদের মমি
বোটানির বিশ্বে
মহাবিশ্ব ক্রমশ প্রসারিত হচ্ছে
পৃথিবী ঘুরছে
দোলক ঘড়ি, পেন্ডুলাম
ঢং ঢং করে কাটা পার হচ্ছে সময়
আমি সেতুর মুখে দাঁড়িয়ে
বোটানির ছাত্রীটির কথা ভাবি
কাইনেটিক্সপড়াচ্ছি
ভেতরে ভেতরে একটা কান্না জমাট বেঁধে
মাঝে মাঝে গর্জন করে
তারই স্ফুলিঙ্গ ও বৃষ্টি নিয়ে
সেরা মূহুর্ত গুলি ধরে আছি
ভাঙা মেঘের পাশে চাঁদের মতো
সুদেষ্ণার আসা যাওয়া আজ বড়ো রোমান্টিক
মনে হয় তাকে কাইনেটিক্স পড়াচ্ছি
তরবারি
এই নেটওয়ার্কের যুগে তোমার কনট্যাক্ট পেলাম না
এই বুক দেখ
নরম আঙ্গুল ছুঁয়েছো যত
ক্ষত হতে হতে প্রত্নশিলায়
বেঁধেছি ঘর
কত স্মৃতির কারুকার্য বিরহে সেজে ওঠে
আমি অভিমান করে আঙ্গুলে এঁকেছি তরবারি
মৃত মানুষের কথা পুরাণ
মৃত মানুষেরা কথা বলে চুপিচুপি
মনের ভিতর প্রত্ন তাদের শরীর
প্রলম্বিত স্বরলিপি উচ্চগ্রামে থাকে
নিশ্চুপ ভাষায় আজও তারা কথা বলে
সরু গলিটা
এক ব্রহ্মবীজে
জন্ম নিল অসংখ্য নক্ষত্র ও পৃথিবী
ক্রমশ তারা দূরে সরে
এই শরীরে ধরেছি আমি
এক অশরীরী পৃথিবী
কোথায় যেন আজান দিয়ে ওঠে একটা নূপুরের গুঞ্জন
কোথায় যেন রাত্রিতে একটা নীরব ব্যথা
আমাকে হাঁটতে শেখায় কবিতা উপত্যকার দিকে
হাঁটতে হাঁটতে আমি ভাবি
কখন এই সরু গলিটা চওড়া হবে ।
■■■■■■■■■■■■■■■■■■■
Sunday, June 18, 2017
জনান্তিকে তুমি কবি
[ মুখবন্ধ :- কবি সুজিত অধিকারীর প্রিয় জন্মভূমির এই সেই বট ,অশ্বত্থ, কাঠগোলাপ । তার পাশেই কবির অনন্ত শয়ান । সেই স্মৃতি তুলে ধরার জন্য আমার ক্ষুদ্র প্রয়াস । ]
উত্তম বসাক
শহর থেকে অনেক দূরে জনান্তিকে
গ্রাম লুকিয়ে অজস্র স্মৃতি নিয়ে
নৈঃশব্দ গ্রাস করে বট - অশ্বত্থ - কাঠগোলাপ
অন্ধকারে পাতা ঝরার শব্দ জুড়ে দেয় ঘ্রাণ
ধুলো মাটি আর শুকনো পাতা আড়াল করে
কবির জাদু ভরা বাঁশি আর জন্মভূমি
মায়ের মন্দির জানান দেয় - সৃষ্টির কলম এখানেই পোঁতা
লুকিয়ে আছো বেদীতলে অন্ধকার অশ্বত্থের পাশে
তোমার শৈশব - কৈশোর - যৌবন
কত স্মৃতি জানে এই গ্রাম
ভোলে নাম কত প্রিয়জন
কিন্তু তোমার কলমে অমর তুমি কবি
বট - অশ্বত্থ - কাঠগোলাপ ভোলেনি তোমাকে
আজও কাঁদে তাঁরা নিভৃতে একান্তে ......
নিজের কবিতা নিজেই পড়ি
( কবি সুজিত অধিকারীর ডায়রির পাতা থেকে )
নাই নাই করে নৈষ্ঠিকের দশ বছর হল । প্রথম প্রথম খুব আনন্দের সাথে সবাইকে দিতাম । এবং আমার কবিতা শোনাতাম । ভদ্র লোকেরা যে বিরক্ত হয় তা বুঝতাম না । শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা তবুও নৈষ্ঠিক বের হয় । একবার একজনকে এক দোকানের সামনে পেয়ে বিনি পয়সায় একটি নৈষ্ঠিক ধরিয়ে দিলাম । দেখলাম তিনি কাগজটি কে নিলেন ।পাশে আমি ফোনে ব্যস্ত একটু দূরে । তারমধ্যে মুড়ি চানাচুর খেয়ে তিনি তেল চিটচিটে হাতটি মুছে দুমড়িয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিল কাগজটি । ব্যথাটা এসে সোজা বুকে বিঁধল । জন্ম দিয়েছিলাম আমরা দুজন । কত কষ্টে লেখা গুলো কালেক্ট করতে হয় তা আমরা জানি ।আমাদের মতো তারাও জানে, একটু নাম ডাকওয়ালা কবি - তাঁর কাছে মিনিমাম সাত দিন ঘুরতে হয়, আরো দামী হলে তো তাঁর পাশেই ঘেঁষা যায় না । তবু নৈষ্ঠিকের বয়স হল দশ, আমার কবিতা লেখা বারো ।
এখন ঘরে বসে নিজের কবিতা নিজেই পড়ি ।
Subscribe to:
Posts (Atom)